গাজা যুদ্ধ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রস্তাবিত যুদ্ধবিরতি পরিকল্পনার প্রথম ধাপ বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি দিয়ে চুক্তিতে সই করেছে ইসরায়েল ও হামাস। বুধবার (৮ অক্টোবর) নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে এই ঘোষণা দেন ট্রাম্প।
তিনি বলেন, “আমি অত্যন্ত গর্বের সঙ্গে জানাচ্ছি যে, ইসরায়েল এবং হামাস আমাদের প্রস্তাবিত শান্তি পরিকল্পনার প্রথম পর্যায় বাস্তবায়নে সম্মত হয়েছে ও সই করেছে। খুব শিগগিরই সব জিম্মিকে মুক্তি দেওয়া হবে এবং ইসরায়েল সমঝোতার ভিত্তিতে গাজা থেকে সেনা প্রত্যাহার করবে।”
চুক্তি সইয়ের খবর প্রকাশ্যে আসার পর গাজার খান ইউনিসে ফিলিস্তিনি যুবকদের উল্লাস করতে দেখা গেছে।
এদিকে, যুদ্ধবিরতি চুক্তির মধ্যস্থতাকারী দেশ কাতারও বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। এক্সে (সাবেক টুইটার) এক পোস্টে কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাজেদ আল আনসারি বলেন, “আমরা, এই যুদ্ধের মধ্যস্থতাকারীরা, ঘোষণা করছি যে আজ রাতে গাজায় শান্তি স্থাপন সংক্রান্ত নতুন পরিকল্পনার প্রথম পর্যায়ের সব শর্ত ও বিধান বাস্তবায়নে একটি চুক্তি সম্পন্ন হয়েছে।”
তিনি আরও জানান, এই চুক্তির ফলে গাজায় যুদ্ধের অবসান ঘটবে, সব ইসরায়েলি জিম্মি ও ফিলিস্তিনি বন্দিদের মুক্তি দেওয়া হবে এবং গাজায় মানবিক ত্রাণ প্রবেশে আর কোনো বাধা থাকবে না। চুক্তির বিস্তারিত বিষয়গুলো পরবর্তী সময়ে ঘোষণা করা হবে।
এর আগে, ২৯ সেপ্টেম্বর ওয়াশিংটনের হোয়াইট হাউসে গাজা যুদ্ধবিরতি নিয়ে নতুন পরিকল্পনার ঘোষণা দেন ট্রাম্প। সেই সময় তাঁর পাশে উপস্থিত ছিলেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু।
ট্রাম্প জানান, তাঁর প্রস্তাবিত শান্তি পরিকল্পনার কপি ইসরায়েল, হামাস, মিসর ও কাতারের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। প্রথমে হামাস ছাড়া বাকি সবাই এতে সম্মতি জানালেও পরে ৩ অক্টোবর হামাসও পরিকল্পনায় যোগ দেয়। পরের দিন, ৪ অক্টোবর, ট্রাম্প ইসরায়েলকে গাজায় বোমাবর্ষণ বন্ধের নির্দেশ দেন।
এরপর ৬ অক্টোবর মিসরের লোহিত সাগর তীরবর্তী শহর শারম আল শেখে ইসরায়েল, হামাস, যুক্তরাষ্ট্র, মিসর ও কাতারের প্রতিনিধিদের বৈঠক শুরু হয়। দুই দিনেরও বেশি সময় ধরে আলোচনার পর অবশেষে ট্রাম্পের প্রস্তাবিত শান্তি পরিকল্পনার প্রথম ধাপ বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ইসরায়েল ও হামাস যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে সই করে।
ট্রাম্প আগেই ইঙ্গিত দিয়েছিলেন, আলোচনার অগ্রগতি ইতিবাচক। ট্রুথ সোশ্যালে বার্তা দেওয়ার কয়েক ঘণ্টা আগে হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, “আমি যতদূর জানি, আলোচনা খুব ভালো দিকে এগোচ্ছে। এটা সত্যিই অসাধারণ। এ সপ্তাহের শেষের দিকে আমি মধ্যপ্রাচ্যে যেতে পারি—সম্ভবত রবিবারই।”
তথ্যসূত্র: এএফপি ও আল-জাজিরা।
